রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন
নাসির উদ্দীন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
টানা ৩৮ দিন যুদ্ধ করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেল নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভারতীয় পাথরবোঝায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় আহত ৫ বছরের ফুটফুটে শিশু মোছা: মুসকান। গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা লংলাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা সে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুসকানের বাবা জালাল হোসেন।
জানা যায়- দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মুসকান সবার ছোট। সে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে নার্সারীতে পড়ত। চলতি বছরের ১৩ই ফেব্রুয়ারী রাতে শহরের গোলাহাট কবরস্থান গেটের সামনে রিকশাভ্যান থেকে নেমে মুসকান ও তার মা বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাস্তা পার হচ্ছিল। ঠিক তখনই রেলওয়ে স্টেশন হতে দ্রুত গতিতে আসা ইফাদ অটোজ লিঃ এর পাথর বোঝায় করে একটি কাভার্ড ভ্যানটি শিশুকে ধাক্কা দেয়। এতে শিশুর পা দুই চাকাতে আটকে পড়ে এবং তার একটি পা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়।
শিশুটিকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৫শে ফেব্রুয়ারী মুসকানকে রংপুর থেকে ঢাকার কলাবাগানে লংলাইফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাক ডাঃ ফয়সাল আহমেদের তত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল তার। দীর্ঘদিন যুদ্ধ করে অবশেষে উল্লেখিত দিনে মারা যায় সে।
এদিকে মুসকানের বাবা পিকআপ চালক দরিদ্র জালাল হোসেন মেয়েকে বাঁচাতে তিন থেকে চার লাখ টাকা খরচ করে এখন নিঃস্ব। একদিকে মেয়েকে হারনোর বেদনা অন্যদিকে সংসার চালনোর চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছেন তিনি।
জালাল হোসেন বলেন- শত চেস্টা করেও বাঁচাতে পারলাম না মেয়েকে। আমাদের মতো এমন করে আর অন্য বাবা-মার বুক যাতে খালি না হয় সেজন্য কাভার্ডভ্যান চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। সেই সাথে দিনের বেলায় শহরে এভাবে যাতে বড় গাড়ী চলাচল না করতে পারে সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সৈয়দপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহিন হোসেন বলেন- মেয়েটি আমার এলাকার। তার মৃত্যুতে আমারা সবাই শোকাহত। ভারতের পাথরবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচলে একদিকে যেমন দূর্ঘটনা বাড়ছে অন্যদিকে সড়কের ক্ষতি হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হলেও আজ অবধি কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।